বিয়ের বয়স পার হয়ে গেলেও বিয়ে হচ্ছে না আমাদের দেশের অধিকাংশ যুবক যুবতীদের। বেশির ভাগ শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের বিয়ে দেরীতে হচ্ছে।
কেন বিয়েতে বিলম্ব হচ্ছে ?
হতে পারে এর একটি কারণ হল - আমাদের দেশের শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের একটি স্বপ্ন থাকে যে, তারা পড়াশুনা শেষ করে একটি চাকুরি করবে । তার পর বিয়ের চিন্তা ভাবনা করবেন। এই একটি স্বপ্ন পূরন করার জন্য বিয়ের সময় পার হয়ে যায় বেশির ভাগ শিক্ষিত ছেলে মেয়েদের। কারণ আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় অনার্স মাস্টার্স শেষ করতে অনেক সময় লেগে যায়। আর অনার্স মাস্টার্স শেষ করার পর চাকুরী খোঁজা অথবা আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়া এই কাজ সম্পন্ন করতেই সময় শেষ হয়ে যায়।
তবে এছাড়াও বিভিন্ন কারণে বিয়ে বিলম্বিত হতে পারে। যেমনঃ পারিবারিক সমস্যা, শারীরিক সমস্যা ইত্যাদি।
ছেলেদের বিয়ের ধারণা
ছেলেদের বিয়ের সময়ের ব্যাপারটা একটু বেশি গুরুত্বপুর্ন। কারণ শুধুমাত্র যৌবন প্রাপ্ত হলেই একটি ছেলে বিয়ের জন্য উপযুক্ত হন না। বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী উভয়ের সাংসারিক ব্যয়ভার সাধারণত ছেলে তথা স্বামীকে বহন করতে হয়।
নিজের স্ত্রীর পাশাপাশি বাবা-মা এর প্রতিও দায়িত্ব পালন করতে হয়। এছাড়া সংসারসহ বিবাহিত জীবনে সকল গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছেলেকেই নিতে হয়। আর এক্ষেত্রে তাকে অনেক বিচক্ষন হতে হয়। অতএব আমরা বলতে পারি ছেলেকে বিয়ের জন্য যেমন শারীরিক ভাবে ও আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হতে হবে, ঠিক তেমনি বুদ্ধিমান ও বিচক্ষনও হতে হবে। আর এসব কারণে তার আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি বয়সের পরিপক্বতাও জরুরী।
মেয়েদের বিয়ের ধারণা
অপরদিকে মেয়েরা যখন যৌবনপ্রাপ্ত হয় তখন থেকেই তারা আসলে বিয়ের উপযুক্ত হয়ে যায়। কিন্তু বিয়ের পূর্বে পর্যাপ্ত শিক্ষা প্রয়োজন বিবাহিত জীবনকে সুন্দর করার জন্য। আর এই শিক্ষা সে অর্জন করে নিজ পরিবার, সমাজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে। যেসব মেয়েরা অল্প শিক্ষিত কিন্তু সুন্দরী হয় তাদের বিয়েও সাধারণত তাড়াতাড়ি হয়ে যায়। কারণ অধিকাংশ ছেলেরা যারা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী থাকে তারা সাধারণত সুন্দরী কিন্তু তুলনামুলক কম শিক্ষিত মেয়েকে পছন্দ করে। ছেলেদের ধারনা স্ত্রী বেশি শিক্ষিত হলে তাদের উপর নিজের মতামত প্রতিষ্ঠা করা সহজ হয় না।
কিন্তু যেসব মেয়েরা পড়াশুনা করে বাবা মাকে সাহায্য করতে চায় আর্থিকভাবে, তারা বিয়ের ব্যাপারে একটু সময় নেন। তারা তাদের পছন্দমত শিক্ষিত পাত্র খুঁজতে থাকেন ফলে তাদের বিয়ে দেরী হয়। তারা চান তাদের স্বামীও শিক্ষিত, ভাল চাকুরিজীবী বা ব্যবসায়ী হোক।
বিয়েতে বেশি বিলম্ব করা ঠিক নয় কেন ?
বিয়ের মাধ্যমে একটি নতুন জীবনের সুচনা হয়। জীবনে গতি আসে যার প্রভাব পরিবার এবং সমাজেও প্রতিষ্ঠা হয়। বিয়ে আমাদেরকে মানসিক ভাবে শক্তিশালী করে তুলে।
বিয়ে বেশি বিলম্বিত হলে নানান ধরনের সমস্যাও হতে পারে। মেয়েদের বয়স বেশি হয়ে গেলে চেহারার মধ্যে বিভিন্ন পরিবর্তন আসে। অনেকের চেহারার লাবন্য কমে যায়। আর ছেলেরা সাধারনত বেশি বয়সের মেয়েদের বিয়ে করতে চান না।
অপরদিকে ছেলেরাও যদি বিয়ে করতে বেশি দেরি করে তখন তাদের মধ্যে বিয়ের আগ্রহ দিন দিন কমে যেতে থাকে। আর মেডিক্যাল সাইন্স এর মতে নির্দিষ্ট একটি সময় পার হওয়ার পর ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে শারীরিক বিভিন্ন জৈবিক চাহিদা সংক্রান্ত ব্যাপারে পরিবর্তন আসে। এক পর্যায়ে তারা বিয়ের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।
অতএব আমাদের কে সময় মত বিয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে নিজেদের জীবনকে আর একধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমার ধারণা অনুযায়ী বললাম এই বলে শেষ করছি।